ইন্টারনেট জগতে ফেসবুকের নাম শোনেনি এমন মানুষ হয়তো খুব কমই আছেন, বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত সামাজিক নেটওয়ার্কিং সাইট হলো ফেসবুক। আর সেই জনপ্রিয় সামাজিক নেটওয়ার্কিং সাইট ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা হলেন মার্ক জাকারবার্গ।
এই ফেসবুক বর্তমান পৃথিবীকে মানুষের হাতের মুঠোতে নিয়ে এসেছে আর অনেক সহজও বানিয়ে ফেলেছে। আর আজকে আমাদের টপিক হলো এই ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতাকে নিয়ে।
আজ গোটা বিশ্বই এই মানুষটাকে চেনে, আর বর্তমান সময় মার্ক জাকারবার্গ এর নাম বিশ্বের সেরা সব বড়লোকদের নামের তালিকাতে রয়েছে…!! আর একটা বিষয় হয়তো অনেকেই জানে না যে, মার্ক জাকারবার্গ ফেসবুকের পাশাপাশি ইন্সটাগ্রাম এবং ওয়্যাটসএ্যাপ এরও মালিক, আর আজকের এই আর্টিকেলে আমরা মার্ক জাকারবার্গ এর জীবনী সম্পর্কে আপনাদেরকে জানাবো…!!
মার্কের পুরো নাম মার্ক এলিয়ট জাকারবার্গ। মার্ক এর জন্ম ১৪ই মে ১৯৮৪ সালে হোয়াইট প্লেইন্স নিউ ইয়র্কে হয়েছিলো, মার্কের বাবার নাম এ্যাডওয়ার্ড জাকারবার্গ তিনি পেশায় একজন ডেন্টিস্ট…!! মার্কের মায়ের নাম ক্যারণ তিনি পেশায় একজন সাইক্রাটিস্ট ছিলেন, এছাড়াও মার্কের ৩টি বোন ছিলো…!!
মার্ক তার শিক্ষা জীবনটা আর্ডসলি হাই স্কুলে শুরু করেন সেখান থেকে একটা সময় মার্ক ফিলিপস এ্যাকাডেমিতে পড়া শুনার জন্যে চলে যায়, মার্ক পড়াশুনাতে বেশ ভালোই ছিলো তাই ফিলিপস এ্যাকাডেমিতে অনেক পুরস্কার অর্জন করে…!! কলেজের এ্যাপ্লিকেশনে মার্ক কি লিখেছিলো সেটা আপনি শুনলে অবাক না হয়ে পারবেন না…
সে ফ্রেঞ্চ-হিবরিউ-ল্যাটিন-ইন্সেন্ট এবং গ্রীক ভাষা বলার পাশাপাশি লিখতেও পারে, আর এসব বুঝিয়ে দেয় যে সে আসলে ঠিক কতোটা ট্যালেন্টেড…!! মার্কে এই সফলতার আসল রহস্য হলো তার প্রোগ্রামিং আর কম্পিউটার নলেজ, মার্কের বাবা মার্ককে বেসিক প্রোগ্রাম শিখিয়েছিলো…!!
এরপর ডেভিড-নিউম্যান নামের একজন সফটওয়্যার ডেভলপার মার্ককে প্রোগ্রামিং এর জন্যে বাসায় গিয়ে পড়াতো, যে বয়সে বাচ্চা গেমস খেলতো সেই বয়সে মার্ক কোডিং করে গেমস বানিয়ে বেশী মজা পেতো…!! ২০০২ সালে মার্ক হাভার্ড এ ভর্তি হয়, মার্ক এখান থেকে পড়াশুনা শেষ করে ভালো চাকরী করতে পারতো কিন্তু সে সব সময় ভিন্ন ধরণের চিন্তা করতো…!!
মার্ক সব সময়ই চাইতো তার নিজের কিছু হোক আর এজন্যেই মার্ক প্রথমে ফেইসম্যাশ নামের একটি প্রোগ্রাম বানিয়েছিলো, এই ওয়েবসাইট কিছুদিন চালু থাকার পরে কলেজ থেকেই এটাকে বন্ধ করে দেওয়া হয় কেননা এই ওয়েব সাইটে অনেক স্টুডেন্টদের ছবি তাদের অনুমতি ছাড়াই ব্যবহার করা হয়…!!
২০০৪ সালের জানুয়ারী মাস থেকেই মার্ক তার নতুন ওয়েবসাইট দ্যা ফেসবুকের জন্যে প্রোগ্রামিং করা শুরু করে দেয়, আর এই ফেসবুকের প্রোগ্রামিং শেষ করে ৪ ফেব্রুয়ারী ২০০৪ সালে এটা লঞ্চ করা হয়…!! শুরুতে এটা শুধুই হাভার্ডের ভিতরে ব্যবহার করা হতো, কিন্তু ধীরে ধীরে মার্ক অনেক জায়গাতে এটা চালু করে…!!
এবং পরে দ্যা ফেসবুক থেকে ফেসবুক নামকরণ করা হয়, ২০০৪ সালে মার্ক হাভার্ডে পড়াশুনা ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবলো আর কিছু বন্ধুদেরকে নিয়ে একটা অফিসও খুলে ফেলে আর সেই থেকেই ফেসবুক বেশ পপুলার হয়ে যায়, আর এরপর অনেক বড়-বড় কোম্পানী ফেসবুক কিনে নেয়ার চেষ্টা করে…!!
মার্ক সবাইকে না করে দেয় কারণ, সে বুঝতে পেরেছিল ফেসবুক আগামীতে ঠিক কতোটা নাম করবে, আস্তে আস্তে ফেসবুক ব্যবহারকারী বাড়ার সাথে সাথে এর ফিচারও বাড়তে থাকে…!! ২০১০ সালের জুলাই মাস আসার আগেই ফেসবুকের ৫০০ মিলিয়ন ইউজার হয়ে যায়, এরপর ২০১২ সালে ফেসবুকে ১ বিলিয়ন ইউজার হয়ে যায় এবং এই বছরই ইন্সটাগ্রাম চালু করা হয়।
মার্ক এবারও বুঝতে পেরেছিল ফেসবুকের মতো এটাও লোকেদের কাছে প্রিয় হয়ে যাবে, তাই সে ইন্সটাগ্রাম এবং এর সাথে ওয়াটসএ্যাপও কিনে ফেলে…!! আর এসবের কারণে আজ মার্ক জ্যুকারবার্গ ৮৫ বিলিয়ন ডলার সম্পত্তির সাথে পৃথিবীর ৪র্থ বড়লোক হিসেবে পরিচিত…!!
মার্ক ১৯ মে ২০১২ সালে প্রেসেলা চ্যানকে বিয়ে করে বিয়ের আগে তারা ডেট করেছে বলে জানা যায়, প্রেসেলা আর মার্কের দুটি মেয়ে রয়েছে, যাদের নাম- ম্যাক্সিমা আর অগেষ্ট…!!
মার্কের জীবন থেকে একটা জিনিস সবারই শিখে নেওয়া উচিত, প্রোফেশনাল জীবন আর পার্সোনাল জীবনকে একই ভাবে সময় দেওয়া উচিত…!!
প্রিয় দর্শক, আর্টিকেলটি কেমন লাগলো আপনার? আপনার কোনও মতামত বা প্রশ্ন থাকলে কমেন্টে জানান এবং আর্টিকেলটি ভালো লাগলে একটি কমেন্টে ও শেয়ার করতে পারেন, ধন্যবাদ।।
Post a Comment